রোপা আমনে বিআর ১১ এর বিকল্প উফশী জাত ব্রি ধান ৪৯
জাত উদ্ভাবন
ব্রি ধান৪৯
এর কৌলিক সারি নং-বিআর৬৫৯২-৪-৬-৪। এ কৌলিক সারি ব্রি
উদ্ভাবিত
অগ্রবর্তী সারি বিআর৪৯৬২ -১২-৪-১ এর সাথে আইআর ৩৩৩৮০-৭-২-১-৩
এর সংকরায়নের
মাধ্যমে উদ্ভাবিত। কৌলিক সারিটি প্রজনন
প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রোপা আমন মৌসুমে
বিআর১১ জাতের চাষাবাদ উপযোগী এলাকায় ফলন পরীক্ষায়
সন্তোষজনক হওয়ায় উফশীজাত হিসাবে ছাড়করণের জন্য চুড়ান্তভাবে
নির্বাচন করা হয়। ২০০৮ সালে জাতীয় বীজ বোর্ড এই
অগ্রবর্তী
কৌলিক সারিটিকে দেশের বিআর১১ জাতের চাষাবাদ উপযোগী এলাকায়
উচ্চ ফলনশীল জাত
হিসাবে ‘ব্রি ধান ৪৯’ নামে
সারাদেশে রোপা আমন মৌসুমে চাষাবাদের জন্য অনুমোদন দেয়।
বৈশিষ্ট্য
- অঙ্গজ অবস্থায় গাছের আকার প্রায় বিআর১১ জাতের মত, তবে বিআর১১ এর চেয়ে খাটো।
- পূর্ণ বয়স্ক গাছের উচ্চতা ১০০-১০৪ সেন্টিমিটার।
- এ জাতের জীবনকাল বিআর১১ এবং ভারতীয় স্বর্ণা জাতের চেয়ে ৭-১০ দিন আগাম অর্থাৎ ১৩২-১৩৫ দিন।
- ধানের শীষে দানাগুলো খুব ঘনভাবে সজ্জিত থাকে। পাকা ধানের রং খড়ের মত।
- ধানের দানা বিআর১১ এবং ব্রি ধান৩২ জাতের ধানের চেয়ে চিকন। রান্না করা ভাত ঝরঝরে এবং খেতে সুস্বাদু।
- ব্রি ধান ৪৯ উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে ৫.০ টন থেকে ৫.৫ টন পর্যন্ত ফলন দেয়।
বিশেষগুণ
- ব্রি ধান৪৯ ঢলে পড়া প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন।
- ফুল আসার সময়কাল ৫-৭ দিনের মধ্যেই সম্পন্ন হয়ে যায় বলে বিআর১১ এর চেয়ে সবগুলো শিষ একসাথে পাকে।
- ব্রি ধান৪৯ এর জীবনকাল ব্রআর১১ এবং স্বর্ণার চেয়ে কম বলে দেশের উত্তরাঞ্চলে গম, আলু ও রবিশস্যের চাষ এবং দক্ষিণাঞ্চলে আগাম বোরো চাষ করা যাবে। এজন্য আষাঢ় মাসের ১ তারিখে বীজ বপন করে কার্তিক মাসের মাঝামাঝি সময়ে ফসল কাটা যাবে।
- ব্রি ধান৪৯ এর চালের আকৃতি দেশে জনপ্রিয় সনাতন সরু চালের জাত নাইজারশাইলের মত। ফলে বাজার মূল্য বেশি পাওয়া যাবে।
আঞ্চলিকউপযোগিতা
দেশের
প্রায় সকল রোপা আমন অঞ্চল বিশেষ করে বিআর১১ জাতের চাষাবাদ উপযোগী এলাকায় চাষ করে
জাতটির অধিক ফলন পাওয়া যাবে।
চাষউপযোগীজমি
বেলে দোআঁশ, এঁটেল
দোআঁশ,
উঁচু এবং মাঝারি উঁচু জমি ব্রি ধান৪৯ চাষের জন্য উপযুক্ত। নিচু
জমি অর্থাৎ যেখানে পানি জমে
থাকে,
সেখান থেকে পানি সরে যাবার পর এই ধান রোপণ করা
যাবে।
বীজবাছাইওশোধন
ভারী, পুষ্ট
ও রোগবালাইমুক্ত বীজ ব্যবহার করতে হবে। বপনের আগে বীজ শোধন
করা ভাল। হেক্টর প্রতি ২০-২৫ কেজি বা বিঘা প্রতি
২.৫-৩.০ কেজি বীজ প্রয়োজন হয়। এক কেজি
বীজ শোধনের জন্য ব্যাভিস্টিন তিন গ্রাম ওষুধ এক লিটার পানিতে মিশিয়ে সারারাত
ভিজিয়ে রাখলে শোধন হয়।
বীজবপন
এক শতক
(৪০ বর্গমিটার) পরিমাণ বীজতলায় ৩.৫-৪.০ কেজি বীজ বোনা দরকার। এরূপ
১ শতক
বীজতলার চারা দিয়ে প্রায় ১ বিঘা জমি রোপণ করা যাবে। জুন
মাসের শেষ
সপ্তাহ হতে জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ (আষাঢ়ের ২য় সপ্তাহ হতে
শেষ সপ্তাহ)
পর্যন্ত বীজ তলায় বীজ বপণ করা যাবে।
বীজতলাতৈরী
দোয়াঁশ ও
এঁটেল মাটি বীজতলার জন্য ভাল। বীজতলার জমি অনুর্বর
হলে প্রতি বর্মমিটার জমিতে ২ কেজি হারে অথবা প্রতি শতাংশ
জমিতে ২ মণ পঁচা গোবর বা আবর্জনা সার সুন্দরভাবে ছড়িয়ে
দিতে হবে। এরপর জমিতে ৫-৬ সেন্টিমিটার পানি দিয়ে দু-তিনটি
চাষ ও মই দিয়ে ৭ থেকে ১০ দিন রেখে দিতে হবে এবং পানি ভালভাবে আটকিয়ে
রাখতে হবে। আগাছা, খড় ইত্যাদি
পচে গেলে আবার চাষ ও মই দিয়ে থকথকে কাদাময় জমি তৈরি
করতে হবে। শেষ জমি তৈরির সময় প্রতি শতকে ১০ গ্রাম ফুরাডান, ১৬০
গ্রাম টিএসপি এবং ২৮০ গ্রাম এমপি প্রয়োগ করতে হবে। এরপর
৩ মিটার
লম্বা ও ১ মিটার চওড়া বেড তৈরি করতে হবে। বেডের
উপরের মাটি বাঁশ বা কাঠের চ্যাপ্টা লাঠি দিয়ে সমান করতে হবে। দুটি
বেডের মাঝখানে ২৫-৩০ সেন্টিমিটার নালা রাখতে হবে যা বীজতলায়
পানি দিতে এবং প্রয়োজনে পানি নিস্কাশনে সহায়ক হয়।
রোপণেরজন্যজমিতৈরি
জাতটির চাষাবাদ
পদ্ধতি অন্যান্য উফশী রোপা আমন জাতের মতই। জমি
চাষে হেক্টর প্রতি ৩-৫ টন পরিমাণ জৈব সার (গোবব বা পচা
আবর্জনা) দিলে ভাল ফলন পাওয়া যাবে। জমি
প্রথমবার চাষ দিয়ে ৭-৮ দিন অপেক্ষা করতে হবে যাতে খড়কুটো আবর্জনা ভালভাবে
মিশে যায়। তারপর শেষ চাষের সময় সবটুকু পটাশ, ফসফেট
এবং জিপসাম
সার ছিটিয়ে জমি চাষ দিতে হবে। জমিতে
২-৩ বার মই দিতে হবে যেন জমি সমান হয়। উত্তমরূপে
কাদা করে জমি জৈরি করলে অনেক আগাছা দমন হয় এবং অতি সহজে চারা
রোপণ করা যায়।
চারারোপণ
জুলাইয়ের শেষ
সপ্তাহ হতে আগস্টের শেষ সপ্তাহ অর্থাৎ
শ্রাবণের দ্বিতীয় সপ্তাহ হতে ভাদ্রের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত ২৫-৩০
দিনের চারা রোপণ করতে হবে। প্রতি গুছিতে
২-৩টি চারা ২-৩ সেন্টিমিটার গভীরতায় রোপণ করা উত্তম। বেশী
গভীরতায়
চারা রোপণ করলে চারার বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং কুশির সংখ্যাও কমে
যায়।
সারিবদ্ধভাবে চারা
রোপণ করতে হবে। সারি থেকে সারির দূরত্ব ২০ সেন্টিমিটার
বা ৮ ইঞ্চি
এবং প্রতি সারিতে গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ১৫ সেন্টিমিটার বা ৬ ইঞ্চি
বজায়
রাখতে হবে। গুটি ইউরিয়া
ব্যবহার করলে চারার দূরত্ব সঠিক হতে হবে। সঠিক দূরত্বে
চারা রোপণ করলে প্রত্যেক গাছ সমানভাবে আলো, বাতাস ও সার গ্রহণের সুবিধা
পাবে,
আগাছা পরিস্কারের জন্য নিড়ানি যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে, আর তা
ভাল ফলনে সহায়ক হবে।
সারেরমাত্রা
ব্রি
ধান৪৯ এর চাষাবাদে সারের মাত্র বিআর১১ ধানের জাতের মতই। এজন্য
প্রয়োজনীয় সারের মাত্রা নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
রোপণকৃতজমিরজন্য
সার
|
কেজি/হেক্টর
|
কেজি/বিঘা
|
গ্রাম/শতাংশ
|
ইউরিয়া
টিএসপি
এমপি
জিপসাম
দস্তা
|
১৭১
৮৩
১০০
১০০
১০
|
২৪
১২
১৪
১৪
১
|
৭০০
৩৩০
৪০০
৪০০
৪০
|
সারপ্রয়োগওব্যবস্থাপনা
সর্বশেষ জমি
প্রস্তুতের সময় সবটুকু টিএসপি ও এমপি সার, অর্ধেক জিপসাম এবং
অর্ধেক
জিংক সালফেট সার একসাথে মিশিয়ে দিতে হবে। ইউরিয়া
সার সমান তিন কিস্তিতে অর্থাৎ
রোপণের ১৫ দিনের মধ্যে ১ম কিস্তি, ৩০ দিনের মধ্যে ২০য় কিস্তি এবং ৪৫
দিনের মধ্যে ৩য় কিস্তি প্রয়োগ করতে হবে। বাকী
অর্ধেক জিপসাম এবং জিংক সালফেট ১ম কিস্তি ইউরিয়ার সাথে মিশিয়ে
প্রয়োগ করতে হবে।
সতর্কতা
ইউরিয়া উপরি
প্রয়োগের ক্ষেত্রে ২-৩ সেন্টিমিটার পানি থাকতে হবে অথবা মাটিতে প্রচুর
রস থাকতে হবে। ইউরিয়া প্রয়োগের সাথে সাথে হাত বা
উইভার দিয়ে
আগাছা পরিস্কার করতে হবে যাতে সার মাটিতে ভালভাবে মিশে যায়। ফসলের
অবস্থার
উপর নির্ভর করে ইউরিয়া সার প্রয়োগের মাত্রার তারতম্য করা
যেতে পারে।
অন্তর্বর্তীপরিচর্যা
চারা রোপণের
পর আগাছা দেখা দিলে নিড়ানি যন্ত্র ব্যবহার করে বা হাতে আগাছা পরিস্কার
করতে হবে। সাধারণত ধানগাছ যতদিন মাঠে থাকে তার তিন
ভাগের প্রথম এক
ভাগ (৩০-৪০ দিন) সময় আগাছামুক্ত রাখলে আশানুরূপ ফলন পাওয়া
যায়। সাধারণত প্রতি কিস্তি ইউরিয়া উপরিপ্রয়োগের পর
পরই আগাছা হাত দিয়ে অথবা নিড়ানি যন্ত্র দিয়ে
পরিস্কার করে মাটির ভিতর পুঁতে দিলে জমির আগাছাও যেমন নির্মুল হবে
তেমনি আগাছা পচে গিয়ে জৈব সারের কাগ করবে। জমিতে
১০-১৫ সেন্টিমিটার পানি রাখতে পারলে আগাছার উপদ্রব কম হবে। প্রয়োজনে
আগছা নাশক সাথী ১০ ডব্লিও জি প্রতি বিঘাতে ২০ গ্রাম এবং
সানরাইজ ১৫০ ডব্লিও জি প্রতি বিঘাতে ১৪ গ্রাম ব্যবহার
করা যেতে পারে।
সাধারণত কাইচ
থোড় থেকে ফুল আসার সময় এবং পরে দানা গঠন পর্যন্ত বৃষ্টিপাত না হলে অর্থাৎ
খরা দেখা দিলে জমিতে ২-৩টি সেচ প্রয়োগ করলে ধানের ফলন শতকরা ৪০-৫০ ভাগ
বাড়ে। বৃষ্টি-নির্ভর খরা
কবলিত ধানের চেয়ে সম্পূরক সেচযুক্ত ধানের ফলন হেক্টরে প্রায়
১ টন এবং বিঘায় ২-৩ মণ বেশি হয়।
বালাইব্যবস্থাপনা
ব্রি ধান৪৯*
এ রোগ-বালাই ও পোকার আক্রমণ প্রচলিত জাত বিআর১১ এর চেয়ে অনেক কম হয়। প্রাথমিক
প্রতিরোধের জন্য ১ম কিস্তি ইউরিয়ার সাথে বিঘা প্রতি ২ কেজি ফুরাডান
প্রয়োগ করা যেতে পারে। ব্রি ধান৪৯ ব্লাষ্ট, ব্যাক্টরিয়াল
লিফ
ব্লাইট (পাতা ঝলসানো) ও মাজড়া পোকার আক্রমণে মাঝারি সহ্য
ক্ষমতা সম্পন্ন। এই ধানে খোল পচা রোগ ভারতীয় স্বর্ণা
ধানের চেয়ে অনেক কম দেখা যায়। তবে নিচু
জমিতে অথবা জলাবদ্ধ জমিতে চাষ করলে এই খোল পচা রোগ দেখা দেয়ার আশংকা বেশি। প্রধান
প্রধান ক্ষতিকারক পোকা ও রোগবালাই দমন করতে পারলে এই ধান চাষাবাদে
শতকরা ২৫ ভাগ ফলন বেশি হতে পারে।
জমিতে ডালপালা
পুঁতে পারচিং করলে পোকাখেকো পাখি ডালাপালায় বসে মাজরা পোকার আক্রমণ
থেকে ফসলকে অনেকটা রক্ষা করবে। এ ছাড়া ডায়াজিনন
(৬০ তরল) প্রতি
হেক্টরে ১.৭০ লিটার স্প্রে করা যেতে পারে অথবা ডায়াজিনন (১৪
দানাদার)
১৩.৫০ কেজি প্রয়োগ করা যেতে পারে। প্রয়োগের
মাত্রা ও নিয়ম বোতলের গায়ে লিখা থাকবে। জমিতে
পাতা পোড়া রোগ দেখা দিলেই ইউরিয়া সারের উপরিপ্রয়োগ বন্ধ
করে দিতে হবে। জমি থেকে পানি সরিয়ে শুকিয়ে ৭-১০ দিন
পর আবার সেচ
দিয়ে বিঘা প্রতি ৫ কেজি এমপি সার গাছের গোড়ায় প্রয়োগ করলে
পাতা পোড়া
রোগের প্রকোপ কিছুটা কম হবে। জমিতে
খোল পচা রোগের প্রকোপ খুব বেশী হলে ফলিকুর (টেবুকোনাজল)
১০ মিলি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করা
যেতে পারে। এছাড়াও কনটাফ (হেক্সাকোনাজল) বা টিল্ট
(প্রপিকোনাজল)
স্প্রে করা যেতে পারে। প্রথম
স্প্রে করার ৭ দিন পর আর একবার স্প্রে করলে ভালো ফলন পাওয়া
যাবে। জমিতে ‘লক্ষ্মীর গু’ বা
‘ফলস
স্মাট’
রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য শিষ
বের হওয়ার সাথে সাথেই ১০ গ্রাম ব্যাভিস্টিন ১০ লিটার পানিতে
অথবা ১০ মিলি ফলিকুর ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে
হবে। প্রথম স্প্রে করার ৭-১০ দিন পরে আরও দু’বার
স্প্রে করলে ভাল
ফলাফল পাওয়া যাবে এবং বীজে কোন দাগ থাকবে না।
ফসলকাটা, মাড়াইওসংরক্ষণ
শিষের অগ্রভাগের
শতকরা ৮০ ভাগ ধানের চাল শক্ত এবং শিষের নিচের অংশে শতকরা ২০ ভাগ ধানের
চাল আংশিক শক্ত ও স্বচ্ছ হলে ধান ঠিকমত পেকেছে বেল বিবেচিত হবে। এ সময়ে
ফসল কেটে মাঠেই বা উঠানে এনে মাড়াই করতে হবে। তাড়াতাড়ি
মাড়াই এর
জন্য ব্রি উদ্ভাবিত মাড়াই যন্ত্র ব্যবহার করা যায়। কাঁচা
খলায় ধান
মাড়াই করার সময় চাটাই, চট বা পলিথিন
বিছিয়ে নেয়া প্রয়োজন। মাড়াই করার পর
অন্তত ৪-৫ বার রোদে শুকিয়ে নিতে হবে।
ধানের বীজ
সংরক্ষণ করতে চাইলে ২-৩ শতক জমির শতকরা ৯০-১০০ ভাগ পাকার পর কাটা উচিৎ হবে। ফসল
কাটার আগে জমি থেকে আগাছা এবং সুষ্ঠু পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে অন্য ধানের
জাত সরিয়ে ফেলতে হবে। সকল রোগাক্রান্ত গাছও অবসারণ
করতে হবে। এরপর বীজ হিসেবে
ফসল কেটে আলাদাভাবে মাড়াই,ঝাড়াই ও ভালভাবে রোদে শুকাতে হবে যাতে
আর্দ্রতা শতকরা ১২ ভাগের নিচে থাকে। তারপর পুষ্ট ধান
বাছাই করতে কুলা
দিয়ে কমপক্ষে দু’বার ঝাড়তে হবে। প্লাস্টিক
ড্রাম বা কেরোসিনের টিন ভালভাবে পরিস্কার করে রোদে শকানো বীজ
ঠান্ডা করে পাত্রে রাখতে হবে। পাত্রের মুখ
ভালভাবে বন্ধ করতে হবে যাতে বাতাস ঢুকতে না পারে। পাত্র
মাটির মটকা বা
কলসী হলে গায়ে আলকাতরার প্রলেপ দিয়ে শুকিয়ে নিতে হবে। পাত্র
মাচায়
রাখা ভাল। মাটিতে রাখলে লক্ষ্য
রাখতে হবে যেন পাত্রের তলা মাটির সংস্পর্শে না আসে,সেজন্য
খড় দিয়ে নিচে কুশন তৈরি করে অথবা বস্তার উপর রাখতে হবে। পোকার
আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ১ মণ ধানে আনুমানিক ১৫০ গ্রাম নিম বা নিশিন্দা
অথবা বিষকাটালির পাতা গুঁড়া করে মিশিয়ে দিয়ে সংরক্ষণ করা যেতে পারে।